fbpx

সাবজেক্ট রিভিউঃ মেরিটাইম ল

মেরিটাইম ল মূলত সমুদ্র বিষয়ক আইন, ২০১৩ সালে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সমদ্রসীমা বিজয়ের পরবর্তি সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে চৌকষ মেরিটাইম আইনজীবীর সমুহ প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন এছাড়াও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষে BSMRMU ACT, 2013 এর মাধ্যমে নবগঠিত দেশের ৩৭ তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম  ইউনিভার্সিটির Faculty of Maritime Governance & Policy এর আন্ডারে  LLB (Hons) in Maritime Law ডিপার্টমেন্ট এর সূচনা হয়।

মেরিটাইম ল চার বছর মেয়াদি ব্যাচেলর ডিগ্রি, যার প্রধান ফোকাস মেরিটাইম ল।
সাধারন ইউনিভারসিটিতে যেখানে ১২০ ক্রেডিট আওয়ার সেখানে মেরিটাইম ল তে ১৫৫+ ক্রেডিট আওয়ার কারন এখানে বার কাউন্সিল এপ্রুভড LLB ছাড়াও মেরিটাইম ল এর কোর্স রয়েছে যা অন্য সব ইউনিভার্সিটি থেকে আমাদের বিশেষত্ব এর পরিচায়ক। আমাদের মূল সার্থকতা আমাদের চৌকষ ও ডাইভার্স ফ্যাকাল্টি। নবনির্মিত বিধায় পার্মানেন্ট ফ্যাকাল্টি, আ্যডজয়েন্ট ফ্যাকাল্টি, অন্যান্য ইউনিভার্সিটির গেস্ট ফ্যাকাল্টি  ছাড়াও নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও আমাদের ক্লাস নিয়ে থাকেন এছাড়াও জটিল মেরিটাইম  কোর্সের জন্য ফরেন গেস্ট ফ্যাকাল্টি থেকেও জ্ঞান আহরনের সৌভাগ্য কোয়ালিটির প্রতি আমাদের ডেডিকেশনের পরিচয় বহন করে।

কনভেনশনাল একাডেমিক পড়াশুনার পাশাপাশি মুট কোর্ট, ল ক্লাব সহ বিভিন্ন ক্লাব এক্টিভিটিজ এবং সেমিস্টারের স্টাডি টূর গুলো যেমন তোমার পোটেনশিয়াল বাড়াবে তেমনি আইন কে সম্পূর্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে দেখার সু্যোগ পাবে। সান্নিধ্য পাবে এডমিরালিটি কোর্টের বর্ষীয়ান জাস্টিস দের আর সমুদ্রের নোনা জল হবে তোমার রক্তের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য।

পরীক্ষা পদ্ধতিঃ

ক. এলএলবি (অনার্স) ইন মেরিটাইম ল’: যেসব বিষয়ে পরীক্ষা হবে-

বাংলা, ইংরেজি, Analytical ability, আইসিটি এবং সাধারণ জ্ঞান

খ. পরীক্ষার পদ্ধতি- নৈর্ব্যক্তিক এবং সংক্ষিপ্ত রচনামূলক।

গ. সময় ৯০ মিনিট এবং পূর্ণমান- ১০০।

আসনসংখ্যাঃ গতবছর অনুযায়ী ৩৮ তবে এবছর কম বেশি হতেও পারে।

মেরিটাইম ল’ এর ক্যারিয়ার ডিটেইলসঃ

★আইনভিত্তিক জেনারেল সাইডের ক্ষেত্রগুলাতে সুযোগ যেমন:
(i) বিচারপতি ( সুপ্রিম কোর্ট )
(ii) জজ
(iii)ব্যারিস্টার
(iii) সাধারন আইনজীবী
(iv) লিগাল এডভাইজার (কোম্পানি,ব্যাংক
মার্কেটসহো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান)
(v) জাজ এডভোকেট জেনারেল (সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর কমিশন্ড অফিসার )
উল্লেখ করা ভাল যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ল ডিপার্টমেন্ট এ নৌবাহিনীর এ ব্রাঞ্চ থেকে অফিসাররা শিক্ষক হিসাবে রয়েছেন।
(vi) সহকারী আইন সচিব (আইন মন্ত্রনালয় -সংসদীয়)
(vii) ইনকামটেক্স আইনজীবী
(viii) শিক্ষক (পাবলিক, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও ল’ কলেজ)
(x) আরবিটর (এডিআর, লিগালএইড)
(xi) সহকারী পরিচালক (বাংলাদেশ ব্যাংক -লিগ্যাল)
(ix)- লিগ্যাল অফিসার (UNCHR, UNDP, UNISEF ইত্যাদি আন্তর্জাতিক সংস্থা)

★আইনভিত্তিক মেরিটাইম সাইডগুলোতে সুযোগ

(i) বিচারপতি ( এডমিরালটি কোর্ট /মেরিন কোর্ট )
(ii) ব্যারিস্টার ,আইনজীবী
(iii) লিগাল এডভাইজার ( মেরিন, শিপিং কোম্পানী )
(iv) লিগাল অফিসার ( দেশে এবং আন্তর্জাতিক পোর্ট )
(v) এর্টনী আন্তর্জাতিক মেরিন কোর্ট ( PCJ, P&l Club, ITLOS)
(vi) আইন কর্মকর্তা (বাংলাদেশে ও আন্তর্জাতিক পোর্টগুলোতে )
(vii) শিক্ষক ( বিশ্ববিদ্যালয় ও মেরিন ইনিস্টিউট )
(viii) মেরিটাইম আরবিট্রেটর

সব থেকে বড় কথা – আমাদের দেশের সরকার তিনটি বিভাগ নিয়ে গঠিত। আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ।
এ বিচার বিভাগ ব্যাতিত যেই যেকোন ডিসিপ্লিন থেকে আসুক না কেন সবাই কাজ করার সুযোগ রয়েছে কিন্তু এই বিচার বিভাগে একমাত্র আইন ব্যাকগ্রাউন্ডধারীরা কাজ করে। তার পাশাপাশি অন্য দুই বিভাগে আইন ব্যাকগ্রাউন্ডধারীরা কাজ করে যাচ্ছেন। উদাহরণ- সংসদ ও মন্ত্রীসভায় ভাল একটা অংশ আইনের ছাত্র, এছাড়াও বাংলাদেশের সিভিল সার্ভিসে অনেকেই আইন ব্যাকগ্রাউন্ড ধারী রয়েছেন ।

অন্যান্য সকল সাবজেক্টের শিক্ষার্থীদের মত ল এর শিক্ষার্থীদের বিসিএসে এবং অন্য যেকোন নন ক্যাডারের চাকরি, ব্যাংক,স্বায়ত্তশাসিত ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সমান সুযোগ রয়েছে। BCS এর সমস্ত ক্যাডার যেমন- ফরেন সার্ভিস, প্রশাসন, পুলিশ, কাস্টমস, আনসার ইত্যাদি সব নন- ট্যাকনিক্যাল ক্যাডারে একজন ফার্স্ট ক্লাস গেজেটেড অফিসার হিসেবে নিয়োগ পেতে পারেন। আইন থেকে পাশ করে বিসিএস এর বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ লাভের উদাহরণ ভুরিভুরি।

আইনের  শিক্ষার্থীরাই একমাত্র candidates যারা সরকারি ভাবে নেয়া টপ দুইটি এক্সামে একই সাথে(BJSC, BCS) participate করতে পারে। বিচার বিভাগ আলাদা হওয়ার পর থেকে শুধুমাত্র আইনের স্টুডেন্টদের মধ্য থেকে BJSC এর মাধ্যমে জজ বা বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়। বিসিএস ক্যাডারের তুলনায় এখানে বেতন বেশি (৩০% বর্ধিত বিচারিক ভাতা) ! এই পদে নিয়োগলাভের সুযোগ শুধুই আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত। শুধুমাত্র আইনের স্টুডেন্ট নেয়ায় এখানে প্রতিযোগীতা তুলনামূলক কিছুটা কম।

★স্কলারশিপঃ

আইন পেশায় উচ্চতর ডিগ্রী নেয়ার জন্য বাংলাদেশের স্বীকৃতকোনো বিশ্ববিদ্যালয় অথবা আর্ন্তজাতিক সংস্থা যেমন- সার্ক,কমনওয়েলথ, আইডিবি, ব্রিটিশ কাউন্সিল থেকে স্কলারশিপ নিয়ে লন্ডনে ব্রিটিশ কাউন্সিলে বার-এট-ল অর্থাৎ ব্যারিস্টারি
করা যেতে পারে। ব্যারিস্টারি করতে হলে লন্ডন বার কাউন্সিলের সনদ নিতে হবে। স্কলারশিপের জন্য জাতীয় অথবা আর্ন্তজাতিক স্কলারশিপ (বৃত্তি) অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।

★আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইন পেশা:

আমাদের দেশে ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার প্রধান পেশা হিসেবে নিলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইন ই হচ্ছে সর্বোচ্চ
পেশা। ইংল্যান্ড, আমেরিকা, রাশিয়া আরো যত বিখ্যাত দেশ আছে, এসব দেশে আইন কেই সর্বোচ্চ পেশা হিসেবে গণনা করে। এমনকি বাংলাদেশেও আইনের প্রতি সকল শ্রেণির মানুষের ঝোক ও ভালোবাসা দিন দিন বাড়ছে। এমনকি বাংলাদেশেও আইন পেশাই
হবে অন্যতম সম্মানিত এবং অন্যতম জনপ্রিয় পেশা, আর এর প্রতিফলন শুধু সময়ের ব্যাপার।

Info: Rafi Ul Osman & Tajwar Arnob

Spread the love

Related Articles

13 Comments

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button
Don`t copy text!